আসসালামু আলাইকুম, আশাকরি সবাই আল্লাহ তায়ালা’র অশেষ রহমতে ভালো আছেন। চলুন সিপিএ মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করা যাক।

সিপিএঃ

CPA- Cost Per Action. অর্থাৎ প্রতিটি সফল একশনের জন্য পেমেন্ট। এখন আপনার প্রশ্ন এই একশনটা কি। ধরুন, কোন গেমিং সাইট একটা অফার দিলো যে, যারা আমাদের সাইটে সাইনআপ করিয়ে দেবে তাদেরকে প্রত্যেকটি সাইনআপের জন্য ৫ ডলার করে দেয়া হবে। এরমানে আপনি কাউকে অফার দিয়ে যদি তাদের সাইটে সাইনআপ করিয়ে দিতে পারেন তাহলে আপনি প্রত্যেকটি সাইনআপের জন্য ৫ ডলার করে পাবেন। আর এই এক একটি সাইনআপ-ই হলো এক একটি একশন। এরকম ভাবে আপনি কনটেন্ট লকিং এর মাধ্যমেও আপনি আয় করতে পারেন। সংক্ষেপে কনটেন্ট লকিং হল কাউকে একটি ভিডিও বা নিউজ দেখার বা কোন কিছু ডাউনলোডের অফার দিয়ে তাকে একটি লিংক দিলেন। সে লিংক এ ক্লিক করে কয়েকটি অফার থেকে তাকে একটি বাছাই করে অফার পূরণ করে ভিডিও বা নিউজ দেখলে বা কোন কিছু ডাউনলোড করলেই আপনি পেমেন্ট পাবেন।
জেনে রাখা ভালো:-
PPD- Pay Per Download
PPI- Pay Per Install
PPL- Pay Per Lead (Specially Email)

 Web Hosting

সিপিএ অফারঃ

উপরে উদাহরণসরুপ গেমিং সাইটের সাইনআপ অফারের কথা বলা হয়েছিল। সাইনআপের মত আরো অফার থাকতে পারে যেমন, ইমেইল সাবমিট, জিপ সাবমিট, ক্রেডিট কার্ড সাবমিট, ডাউনলোড, ইনস্টল ইত্যাদি।

কেন আপনি সিপিএ মার্কেটিং করবেনঃ

অনলাইনে অনেকে অনেকভাবে আয় করছেন- ফ্রিল্যান্সিং এবং অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে। আপনি হয়ত জানেন ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে যথেষ্ট দক্ষতার পাশাপাশি বিড করে ইন্টারভিউ দিয়ে কাজ পেতে হয়। যা ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে খুবই পেইনফুল। যদিও সিপিএ মার্কেটিং অনলাইন মার্কেটিং এর মধ্যে পড়ে তারপও অনলাইন মার্কেটিং বলতে প্রধানত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকেই বোঝায়।  সংক্ষেপে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অন্য কারো একটি প্রোডাক্টকে সেল করে কমিশন লাভ করা। এক্ষেত্রে নতুনদের জন্য সমস্যা হলো কারো কাছে সেল করা। অবশ্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংই আয়ের সেরা মাধ্যম বলে আমি মনে করি। তবে তা নতুনদের জন্য নয়। তাহলে সিপিএ মার্কেটিং সহজ নতুনদের জন্য সহজ কেন? এক কথায় ইমেইল সাবমিট, জিপ সাবমিট, ক্রেডিট কার্ড সাবমিট, ডাউনলোড, ইনস্টল ইত্যাদি করতে ভিজিটরকে কোন টাকা খরচ করতে হয় না। আর জন্যই এটা বর্তমান সময়ে খুবই জনপ্রিয়। আমার এক অনলাইন সহকর্মী পাঁচটি টিমকে কাজে লাগিয়ে শুধু সিপিএ মার্কেটিং করে  আজ অনেক সফল। সুতরাং সিপিএ মার্কেটিং শুধু নতুনদের জন্য নয় সবার জন্যই হতে পারে অনলাইন উপার্জনের সেরা মাধ্যম।

কোথায় পাবেন সিপিএ অফার গুলোঃ

বিশ্বে অনেক সিপিএ নেটওয়ার্ক আছে। তবে সব সিপিএ নেটওয়ার্ক বিশ্বস্ত নয়। অনেক সিপিএ নেটওয়ার্ক আছে যাদের ভালো কোন অফার নেই। এখানে ভালো অফার বলতে যে অফার গুলো সত্যিকার অর্থে কারো উপকারে আসবে না। যেমন কোন সিপিএ নেটওয়ার্ক একটি অফার আছে স্টুডেন্ট লোনের ব্যাপারে। কিন্তু তারা আদৌ কাউকে লোন দেয় না। আবার এমন কিছু অফার তারা পাবলিশ করে যা বেশিদিন থাকে না। সুতরাং সিপিএ নেটওয়ার্ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু হিসেব করে নির্বাচন করা দরকার। বর্তমানে সেরা সিপিএ নেটওয়ার্ক গুলোর মধ্যে ৫ টি নিচে উল্লেখ করা হলঃ
১. Peerfly
২. Maxbounty
৩. Neverblue
৪. Clickbooth
৫. Matomy

আপনি নতুন হিসেবে এসব নেটওয়ার্ক এ এপ্রোভাল পেতে কঠিন হয়ে যাবে। হয়ত নাও পেতে পারেন। তবে হতাশার কিছু নেই। কিছু কিছু সিপিএ নেটওয়ার্ক আছে যেখানে আপনি ইনস্টান্ট এপ্রোভাল পাবেন। এরকম কয়েকটি নেটওয়ার্ক হলঃ সাইনআপ পদ্ধতিসহ

১. Adscendmedia
২. Adworkmedia
৩. CPA Grip
৪. CPA Elites
৫. CPALead

এগুলোর মধ্যে Adscendmedia-কেই আমি বেশি প্রাধান্য দেই। কারণ Adscendmedia-তে আপনি ৫০০ ডলার আয় করলে Peerfly-তে সহজে এপ্রোভাল পাবেন আশাকরি। আর Peerfly হলো অত্যন্ত চমৎকার একটি সিপিএ নেটওয়ার্ক।

:::যেভাবে আপনি অফার এনালাইসিস করতে পারেন:::
কিছু কিছু সাইট যেখানে সমস্ত সিপিএ অফার গুলো বিস্তারিত পাওয়া যায়। যেমনঃ
১. Affpaying
২. Offervault
৩. oDigger

সিপিএ নেটওয়ার্ক এ রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিঃ

প্রায় সব সিপিএ নেটওয়ার্ক সাইটে সাইনআপের সময় আপনার প্রোমশন মেথড অথবা প্ল্যান সম্পর্কে জানতে চায়। সেক্ষেত্রে নিচের এই লেখাটুকু কপি-পেস্ট করে দিন।

I am planning to advertise my links and earning money by creating websites, youtube videos and also advertising with ppc and ppv(bing ads,facebook ads and leadimpact). I plan on making a website for each niche I have and also plan on doing some SEO to get it high on Googles ranking system. I have been motivated by various people to start earning money on the web and I will dedicate a few hours of my day to achieve this. I hope to be earning with your website soon.

যদি বলে- Incentive Traffic: Yes/No. আপনি No দিবেন। ইনসেনটিভ ট্রাফিক মানে আপনি ঘুষ দিয়ে ট্রাফিক আনবেন কি না সেটা।  Website URLs: youtube.com

যেভাবে আপনি অফার গুলো প্রোমট করবেনঃ

আপনি যখন কোন সিপিএ নেটওয়ার্ক সাইটে এপ্রোভাল পাবেন তখন সেই সাইটে লগিন করলে আপনার ড্যাশবোর্ড পাবেন। ড্যাশবোর্ডে গিয়ে আপনার পছন্দমত অফার বাছাই করবেন। সেই অফারে আপনার লিংকটি পাবেন। সেই লিংকটিই আপনি প্রোমট করবেন। ধরুন, আপনার পছন্দ গেম নিয়ে কাজ করা। তাহলে আপনি গেমিং অফার বাছাই করবেন। এরপর গেম রিলেটেড জায়গায় আপনার লিংকটি প্রোমট করবেন।
promote সিপিএ মার্কেটিং হতে পারে আপনার অনলাইন আয়ের সেরা মাধ্যম [নতুনদের জন্য একটি পরিপূর্ণ গাইডলাইন]বর্তমান সময়ে বড় বড় মার্কেটাররা সিপিএ নিয়ে উঠেপরে লেগেছেন। তারা পেইড ক্যাম্পেইন করে অফারগুলো প্রোমট করছেন। আবার অনেক সফল মার্কেটার আছেন যারা এখনো ফ্রি ট্রাফিক বা ভিজিটর এর কাজ করে যাচ্ছেন। সুতরাং আপনিও শুরু করতে পারেন ফ্রি ট্রাফিক দিয়ে এবং নতুনদের জন্য ফ্রি ট্রাফিকই রিকমেন্ড করা হয়। ফ্রি ট্রাফিক সোর্সের মধ্যে রয়েছে- ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং, ব্লগ কমেন্টটিং, ফোরাম পোস্টিং, আর্টিকেল মার্কেটিং এবং সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং যেমন- ফেসবুক, টুইটার পিন্টারেস্ট ইত্যাদি। তবে অবশ্যই স্প্যাম করে নয়। দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে অগ্রসর হতে হবে। তবে বর্তমান সময়ে ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয়। সংক্ষেপে ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং-  আপনার অফার রিলেটেড ভিডিও বানান, ইউটিউবে চ্যানেল তৈরি করুন, সেখানে ভিডিওটি আপলোড করুন, ভালো একটি টা্ইটেল দিন, ডিস্ক্রিপশন লিখুন এবং সেখানে আপনার অফারের লিংক দিন। এরপর আপনার ভিডিওটি বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করুন। তবে ইউটিউব এর ডিফল্ট শেয়ার গুলোই যথেষ্ট বলে আমি মনে করি। ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং এ আরেকটা বোনাস হলো গুগল এডসেন্স থেকে আয়। সুতরাং একসঙ্গে আপনি দুইটা উপার্জন করতে পারছেন। ইউটিউব এবং অন্যান্য ফ্রি ট্রাফিক নিয়ে একটু পড়াশোনা করুন।

কিভাবে পেমেন্ট পাবেনঃ

বেশিরভাগ সিপিএ নেটওয়ার্ক এ সহজ পেমেন্ট ব্যবস্থা রয়েছে। সহজ বললাম এই কারণে যে, প্রায় সব সিপিএ নেটওয়ার্ক এ পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড সাপোর্ট করে। আর বাংলাদেশ থেকে পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড পাওয়াটাও মোটামুটি সহজ। পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড ব্যবহারের সুবিধা হলঃ-
১. প্রায় সব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নেটওয়ার্ক এবং ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
২. পেওনিয়ার কার্ড থেকে সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
৩. যে কোন এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
৪. ডোমেইন এবং হোস্টিং কোম্পানির বিল পরিশোধ করতে পারবেন।
৫. যুক্তরাষ্ট এবং যুক্তরাজ্যের যেকোন কোম্পানি থেকে বিল নিতে পারবেন।
৬. বাংলাদেশের বিভিন্ন শপিং সেন্টার থেকে কেনাকাটা করতে পারবেন।
৭. যুক্তরাষ্ট ভিত্তিক একটা ব্যাংক একাউন্ট পাবেন যা ক্লিকব্যাংক এবং পেপালসহ আরো অনেক জায়গায় কাজে লাগতে পারে।
৮. বাংলাদেশ থেকে পেপাল ভেরিফিকেশন করতে পারবেন।

আপনি পুরোপুরিভাবে আয় করার মনোস্থির না করে দয়া করে পেওনিয়ার কার্ডের জন্য আবেদন করবেন না। অযথা কার্ড নিলে আপনারও ক্ষতি, কোম্পানিরও ক্ষতি। আপনার ক্ষতিটাই বেশি। একটি কার্ড আপনি একবছর কোন ফি না দিয়েই ব্যবহার করতে পারবেন যদি ব্যালেন্স শূণ্য থাকে। তবে এক বছর পার হয়ে গেলে আর তা ব্যবহার করতে পারবেন না। ধরুন কার্ড পাওয়ার এক বছর পর আপনি ইনকাম করতে শুরু করলেন। কিন্তু তখন আর দ্বিতীয়বার কার্ড পাবেন না। সুতরাং অযথা কার্ড নিলে আপনারই ক্ষতি বেশি।

পেওনিয়ার কার্ডের যে কোন একজনের রেফারেল লিংকের মাধ্যমে সাইনআপ করবেন। এতে আপনার আবেদনটির এপ্রোভাল পাওয়া সহজ হবে। এছাড়া কারো রেফারেলে ব্যতীত সাইনআপ করলে ২৫ ডলার বোনাস থেকেও বঞ্চিত হবেন। তবে কারো রেফারেলে সাইনআপ করলে ২৫ ডলার বোনাস তখনই পাবেন যখন আপনার পেওনিয়ার কার্ডে একবারে অথবা ধাপেধাপে মোট ১০০ ডলার লোড হবে। আমার রেফারেলে সাইনআপ করতে নিচে ক্লিক করুন।

    পেওনিয়ার সাইনআপ

[পেওনিয়ার কার্ডের জন্য আবেদন করতে ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট/ জাতীয় পরিচয় পত্রের স্বচ্ছ স্ক্যান্ড কপি লাগবে]
যদি সাইনআপ প্রক্রিয়া না বুঝে থাকেন তাহলে নিচের লিংকে ক্লিক করে বিস্তারিত দেখে নিন।

   পেওনিয়ার সাইনআপ প্রক্রিয়া

অনলাইন আয়ে সফল হওয়ার মূলমন্ত্রঃ

আপনি প্রতিদিন অনলাইনে ঘোরাফেরা করেন এবং অনেক রকম ইনকাম করার পোস্ট দেখে ভাবেন আপনি সেটাই করবেন। কিছুদিন যাওযার পর আরেকটি ইনকামের পথ দেখে আগেরটি বাদ দিয়ে দেন। কি ভুল বললাম নাকি? বেশিভাগ অনলাইন আর্নিং সিকারদের  ক্ষেত্রে তাই হচ্ছে। আমার নিজের ক্ষেত্রেও তাই হতো। এটা একটা বিশাল সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের উপরে অনলাইনে অনেক দামি দামি কোর্স পাওয়া যায়। আমি আপনাদের সংক্ষেপে কিছু বলতে চাই। তা হলো ফোকাস ঠিক রেখে গোল সেট করা। মনে করুন, আপনার ফোকাস হলো সিপিএ মার্কেটিং করে ইনকাম করবেন। অথবা সিপিএ-র বিভিন্ন অফারের মধ্য থেকে গেমিং অফার নিয়ে কাজ করবেন। এটিই হলো আপনার ফোকাস। আর গোল সেট করা হচ্ছে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে যা যা করতে হবে তার একটা কঠিন রুটিন করা এবং তা সঠিকভাবে পালন করা। সুতরাং আপনি কখন কি কাজ করবেন, একটি কাজের জন্য কতক্ষণ সময় লাগতে পারে তা একটি নোটবুকে লিখুন এবং সেই অনুসারে অগ্রসহ হোন। আপনার প্ল্যানের বাইরে কোন কিছুই করবেন না। নিয়মিত নামাজ আদায় করুন। কাজ অনেক সহজ হবে এবং অনেক সময় পাবেন।
সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।

Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *